অবৈধ বালু উত্তোলন ইউএনও অফিস ও থানায় অভিযোগ দিয়ে বিপাকে ভুক্তভোগী

হারুন-অর-রশিদ বাবু 

২৪ মার্চ ২০২৫, বিকাল ৬:১৬ সময়
Share Tweet Pin it
[অবৈধ বালু উত্তোলন ইউএনও অফিস ও থানায় অভিযোগ দিয়ে বিপাকে ভুক্তভোগী]

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের বুজুরক তাজপুরে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে, বর্ষা মৌসুমে বসতভিটা ভাঙ্গার আতংকে চার পরিবার। 

হামরা বাবা গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই। তিন মাস থাকি ড্রেজার দিয়ে বালু তুলিয়া দরিয়া বানে ফেলাইছে।কুনদিন যে হামার বাড়ি ধ্বসি পড়ে আল্লায় জানে।প্রতিবাদ করছিনু জন্য মোক ধরি ডাঙ্গাইছে। ইউএনও অফিসত অভিযোগ দিছো জন্য মোর ঠ্যাঙ্গ ভাঙ্গি দিবার চাইছে।

সরেজমিন তদন্তে গেলে কান্নাজরিত কন্ঠে এভাবেই কথাগুলো প্রতিবেদককে বলছিলেন ভুক্তভোগী দিনমজুর আবুল হোসেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের বুজরুক তাজপুরে পুকুর খননের নামে গত তিনমাস থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় শাহ আলম গং। তিনমাস যাবৎ পকুরে থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অনবরত বালু উত্তোলনের ফলে পুকরের পাড় সংলগ্ন আবুল হোসেনের বাড়িসহ চার দিনমজুরের পরিবার বাড়ি ভেঙ্গে পুকুরে পড়ার ঝুঁকিতে আছে। যে কোন মুহুর্তে ঘরবাড়ি ধ্বসে পুকুরে পড়তে পারে। 

হঠাৎ করেই পুকুর গভীর খনন করার কারণে বাড়ি ভেঙ্গে পরার উপক্রম দেখে হতদরিদ্র দিনমজুর আবুল হোসেন প্রতিবাদ করেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দিনমজুর ও তার পরিবারের সদস্যদের বেধড়ক মারপিট করে অবৈধ বালু ব্যবসায়ী শাহ আলম গং। এঘটনায় গত ১০ মার্চ ভুক্তভোগী আবুল হোসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মিঠাপুকুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ দায়েরের পর এসিল্যান্ড অফিস, ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও থানা থেকে পুলিশ সদস্যরা এলে স্থানীয় এক সাংবাদিকের সহযোগিতায় শাহ আলম গং অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে পুনরায় বালু উত্তোলন শুরু করে। সেই সাথে বালু সিন্ডিকেট হোথা শাহ আলম ভুক্তভোগীকে হুমকি দিয়ে বলে, আমরা সব অফিস ম্যানেজ করেই বালু তুলতেছি। এরপরে কেউ অভিযোগ দিলে পা ভাঙ্গি দিবো। 

এবিষয়ে অপর ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম  জানান, হামরা বাপু গরিব মানুষ। ওরা টাকা দিয়ে পুলিশ,ইউএনও,এসিল্যান্ড সব অফিসের লোক কিনি ফেলাইচে। হামার কোন বিচার নাই। এই বাড়িটায় হামার সম্বল। এ্যালা আল্লাহ আল্লাহ করতেচি বাড়িঘরটা যিহিন ধ্বসি না পড়ে।

এবিষয়ে মিঠাপুকুর থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন বাদীকে আমার কাছে ফোন দিতে বলেন আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। ১০ তারিখের অভিযোগ এখন পর্যন্ত কি ব্যবস্থা নিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ভাই অভিযোগ তো অনেক আমি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। 

মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ চন্দ্র বর্মণ জানান, এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে উক্ত স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। এসিল্যান্ড নিজে থেকেই অভিযান পরিচালনা করছেন আপনি তার কাছে ফোন দিলে বিস্তারিত জানতে পারবেন। অবৈধ বালু সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ হচ্ছেনা কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের আন্তরিক সহযোগিতা চান। তিনি বলেন সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা পেলে উপজেলার অপরাধ দমন করা সহজ হবে।